- পুরুলিয়ায় ১০ বছরের বালকের মৃত্যুতে মুখ খুলল প্রশাসন
- শনিবার বিকেলে এই মর্মে সাংবাদিক বৈঠক ডাকা হয়
- সাংবাদিকদের সঙ্গে বসে প্রশাসনের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন তিনি
- সেই সঙ্গে সাংবাদিকদের সামনে প্রাথমিক ময়না তদন্তের রিপোর্ট পেশ করেন
লকডাউনের জেরে বহু স্থানেই নানা অসুবিধার মধ্যে রয়েছে মানুষ। অনেকেই অভিযোগ করছেন তাঁরা ঠিকমতো খাবার-দাবার সংগ্রহ করতে পারছেন না। যদিও, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে প্রশাসন সবস্থানেই অতিসক্রিয় হয়ে উঠেছে। তৈরি করা হয়েছে একাধিক দল। যারা জেলার বিভিন্ন এলাকায় নজরদারি করছেন। মানুষ অসুবিধায় পড়লেই ছুটে যাচ্ছেন প্রশাসনের প্রতিনিধিরা। কিন্তু, এহেন পরিস্থিতির মধ্যে বাংলা জুড়ে হইচই শুরু হয় ১০ বছরের বালকের মৃত্যু নিয়ে। পুরুলিয়া পাড়া ব্লকের শাকড়া গ্রামের এই ঘটনা ঝড়ের গতিতে ছড়িয়ে পড়ে যখন পরিবার থেকে অভিযোগ করে বলা হয় অনাহারের জন্যই মৃত্যু। শনিবার বিকেলে এই নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেন পুরুলিয়ার জেলাশাক রাহুল মজুমদার। তিনি সাফ জানিয়ে দেন, এই মৃত্যুর সঙ্গে কোনওভাবে অনাহার জড়িত নয়। মস্তিষ্ক জনিত রোগের কারণে ১০ বছরের ওই বালকের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়ে দেন তিনি। সেই সঙ্গে বিভ্রান্তিমূলক খবর প্রচারের বিরুদ্ধে সরব হন তিনি। যারা লকডাউনের মতো এমন জরুরি অবস্থায় বিভ্রান্তিমূলক খবর ছড়াচ্ছে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ারও ইঙ্গিত দেন।
শনিবার দুপুরে পুরুলিয়ার পাড়া ব্লকের ১০ বছরের বালকের মৃত্যুর খবরটি প্রকাশ্যে আসে। অত্যন্ত দরিদ্র এই পরিবারের পক্ষে মৃত বালক শেখ শাকিলের বাবা শেখ রহিম জানান, সকাল থেকে বমি করছিল ছেলে। এরপর স্থানীয় উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গেলে কিছুক্ষণ পরেই সেখানে মারা যায় সে। এরপর দেহ বাড়িতে নিয়ে চলে আসেন শেখ রহিম। পেশায় রিক্সা চালক শেখ রহিম সে সময় অভিযোগ করেছিলেন তিন দিন ধরে ঘরে খাবার বলতে কিছুই নেই। এমনকী শনিবার দুপুর পর্যন্ত পরিবার অভুক্ত রয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। অনাহারে ছেলে শাকিল পীত-বমি করতে করতে মারা গিয়েছে বলেও দাবি করেন শেখ রহিম। যদিও, রহিমের এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে সে সময় উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং প্রশাসনের তরফে কোনও বয়ান পাওয়া যায়নি।
বিকেলে সাংবাদিক সম্মেলনে জেলাশাসক রাহুল মজুমদার সাফ জানিয়ে দেন, অনাহারের যে যুক্তি খাড়া করা হয়েছে তা ধোপে ঠেকে না। এই বলে তিনি ওই পরিবারের কার নামে কটা রেশন কার্ড রয়েছে সে হিসাবও দিয়ে দেন। জেলাশাসক জানান, শেখ রহিমের পরিবারে মোট ৭টি রেশনকার্ড রয়েছে। এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহেই এই সবকয়টি কার্ড দেখিয়ে ৭ কিলো চাল এবং সাড়ে দশ কিলো আটা রেশন থেকে পরিবারটি ফ্রি-তে পেয়েছিল বলে জানিয়ে দেন জেলাশাসক। এমনকী, এরপর আইসিডিএস থেকে ওই পরিবারে ২ কিলো চাল এবং ১ কিলো আলু গিয়েছে। এর আগে ২৭ মার্চ ওই পরিবারটি মিড-ডে মিল প্রকল্প থেকে ২কিলো চাল, ১ কিলো আলু এবং ৩টি ডিম পেয়েছে বলেও জানান তিনি। সুতরাং, যে পরিবারে এত পরিমাণ খাবার গিয়েছে সেখানে কীভাবে অনাহার থাকতে পারে তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন জেলাশাসক।
মৃত শেখ শাকিলের বাবা শেখ রহিম শনিবার সকালে দাবি করেছিলেন যে, তারা প্রশাসন থেকে সাহায্য পাননি এমনটা নয়। কিন্তু, পরিবারের সদস্যসংখ্যা অনুযায়ী তা অপ্রতুল ছিল বলেই দাবি করেছিলেন তিনি। এমনকী শেখ রহিম দাবি করেছিলেন ১৭ থেকে ১৮ দিন আগে পাওয়া রেশনে এতদিন কীভাবে চলবে। যদিও, জেলাশাসকের দেওয়া রেশনের তারিখের হিসেবের সঙ্গে শেখ রহিমের বলা ১৭-১৮ দিনের কোনও মিল নেই। এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে রেশন পেলে তাতে দিনের হিসেবের সংখ্যাটা স্পষ্ট হচ্ছে না। তবে, জেলাশাসক সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, জরুরি এই অবস্থায় তাঁরা সংবাদপরিবেশনে কোনও বাধা চাইছেন না। তাঁদের আর্জি শুধুমাত্র বিভ্রান্তিমূলক খবর না প্রচার করার।
আরও পড়ুন- সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেন তিনজন, করোনা চিকিৎসায় সাফল্যের নজির উত্তরবঙ্গেও
আরও পড়ুন- লকডাউনে ত্রাতা কলকাতা পুলিশ, পড়ুয়ার আবেদনে সাড়া দিলেন খোদ সিপি অনুজ শর্মা
আরও পড়ুন- কমপ্লিট লকডাউন হচ্ছে না, রাজ্য়ে হটস্পট-এর বদলে 'মাইক্রো প্ল্যানিং'
Read Exclusive COVID-19 Coronavirus News updates, from West Bengal, India and World at Asianet News Bangla.
Stay informed about the CORONAVIRUS updates through Asianetnews Covid 19 Bulletin. Click to Read
Last Updated 12, Apr 2020, 7:32 AM